টাঙ্গাইলের ঘাটাইল-ভূঞাপুর ১১ কিলোমিটার সড়কে ৭৬টি বাঁকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। এর মধ্যে সড়কের ১২টি পয়েন্টে ‘আন্ধা’ বাঁক রয়েছে। এই বাঁকগুলোতে ঘরবাড়ি ও গাছপালা থাকায় এক পাশের পরিবহন অন্যপাশ থেকে দেখা যায় না। সড়কে ঘন ঘন এসব বাঁক থাকার কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
ভূঞাপুর শিয়ালকোল বাজার থেকে ঘাটাইলের স’মিল রোড পর্যন্ত সড়কে অসংখ্য বাঁক রয়েছে। যার মধ্যে আন্ধা বাঁক রয়েছে বেশ কয়েকটি। এই বাঁকগুলোতে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটে। উত্তরবঙ্গের পরিবহনসহ সড়কটি দিয়ে জামালপুর, শেরপুর, ভালুকা, সাগরদীঘি ও ময়মনসিংহের মানুষজন যাতায়াত করেন।
জানা গেছে, ভূঞাপুর-ঘাটাইল গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের। এটি ভূঞাপুর থেকে শিয়ালকোল লোকেরপাড়া হয়ে জামুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দিয়ে ঘাটাইলে চলে গেছে। সড়কটি যেমন সরু অন্যদিকে একটু পরপর রয়েছে বাঁক। এতে সড়কের শিয়ালকোল বাজার থেকে চেংটা, মাকেশ^র, ছনুটিয়া, গলগণ্ডা ও জামুরিয়া এলাকায় বেশি বাঁক রয়েছে। বাঁকগুলোতে পরিবহন ধীরগতিতে চলাচল করতে হচ্ছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে বাঁক থাকায় একটি পরিবহনের সঙ্গে আরেকটি পরিবহনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে।
চেংটা গ্রামের মোবারক হোসেন বলেন, মোড়ের পাশেই বাড়ি। প্রতিনিয়ত ছোট ছোট দুর্ঘটনা ঘটে মোড়ে। একদিকে সরু রাস্তা অন্যদিকে মোড়ে বিপরীত দিকের গাড়ি দেখা যায় না। এছাড়াও অনেক চালক বেপরোয়াভাবে পরিবহন চালানোর কারণে মোড়ে দুর্ঘটনা ঘটছে।
গলগণ্ডা এলাকার ভ্যানচালক ইদ্রিস হোসেন বলেন, কয়েকদিন আগেও আমার সামনে দুর্ঘটনা ঘটলো মোড়ের মধ্যে। এরকম প্রতিনিয়তই হয়। রাস্তাটা যদি বড় করা হয় তাহলে দুর্ঘটনা কমে আসবে।
সড়ক ব্যবহারকারীরা জানান, ভূঞাপুর-ঘাটাইল আঞ্চলিক সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ছোট-বড় অনেক পরিবহন অহরহ চলাচল করে। কিন্তু সড়কটি খুবই সরু। একটা গাড়িকে আরেকটা গাড়ি পাশ কাটিয়ে যাওয়া কঠিন। সড়কটি প্রশস্ত বা বড় করলে বাঁকগুলোও বড় হবে, এতে গাড়ি চলাচলে সুবিধা হবে, তেমনই দুর্ঘটনা কমে আসবে।
ঘাটাইল থেকে আসা উত্তরবঙ্গগামী ট্রাকচালক ইলিয়াস বলেন, এ রকম ভয়ানক মোড় বাংলাদেশের কোনো সড়কে দেখিনি। গাড়ি ঘোরাতে চরম বেগ পেতে হয়। এছাড়া ছোট গাড়িগুলো মোড় পার হওয়ার আগে হর্ন দেয় না। ফলে বোঝা যায় না মোড়ের অপর পাশে কোনো গাড়ি আছে কিনা।
চালকরা জানান, কম রাস্তা পেরিয়ে গন্তব্যে যাওয়ার জন্য এই সড়ক ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সড়কটি ছোট। আবার ঘন ঘন বাঁক রয়েছে। বাঁক ঘুরতেও অনেক সময় লেগে যায়। আবার এই সড়কের একটি জায়গা একটি ঝুঁকিপূর্ণ সেতু রয়েছে। বড় গাড়ি হলে ওই সেতুটি পাড় হওয়া খুবই কষ্টের। যানবাহন চলাচলে সড়কটি প্রশস্ত করা দরকার। এছাড়া বাঁকের দুই পাশে গাছ পালা নিয়মিত কাটা মোড়গুলোতে যেন কোনো স্থাপনা না থাকলে দুর্ঘটনা কমে আসবে।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাব ডিভিশনের (মধুপুর) প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম জানান, ভূমি অধীন জটিলতার কারণে সড়কটি প্রশস্ত করার কাজের উদ্যোগ নেওয়া যাচ্ছে না। তবে জটিলতা কেটে গেলে ভূমি অধিগ্রহণ, বাঁক সহজীকরণ ও সড়ক প্রশস্ত করার প্রকল্প নেওয়া হবে। মধুপুর সাব ডিভিশনের অধীনস্থ শুধু এই সড়কটি ১২ ফুট আর অসংখ্য বাঁক রয়েছে।
আজকালের খবর/ওআর