গোটা বিশ্বের অর্ধেকের বেশি শিশু সংঘাত, দরিদ্রতা ও মেয়েদের বিরুদ্ধে বৈষম্য- এই তিন হুমকির যে কোনো একটির ঝুঁকিতে আছে। ফলে তারা হঠাৎ শৈশব হারিয়ে যাওয়ার হুমকিতে আছে বলে জানিয়েছে সেভ দ্য চিলড্রেন। শিশুদের নিয়ে কাজ করা সংস্থাটি এক প্রতিবেদনে বলেছে, ১৭৫টি দেশের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। শিশুশ্রম, শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়া, বাল্যবিবাহ এবং অল্পবয়সে গর্ভবতী হওয়া-এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে দেশগুলোর র্যাংকিং করা হয়।
তালিকায় বাংলাদেশ আছে ১৩০ নম্বরে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের মধ্যে ভারত আছে ১১৩ নম্বরে, পাকিস্তান ১৪৯, শ্রীলঙ্কা ৬০, ভুটান ৯৮, মালদ্বীপ ৫২, নেপাল ১৩৮ ও আফগানিস্তান ১৬০ নম্বরে। যদিও তারা বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে বাস্তবতা বলছে অন্য কথা। বাংলাদেশের সবশেষ মাধ্যমিক শিক্ষাবর্ষের প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন শিক্ষার্থীর ঝরে পড়ার বিষয়টি রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগের অপচয় এবং যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে জানা গেছে, দুই বছর আগে নবম শ্রেণীতে ২০ লাখ ৭৪ হাজার শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেছিল। কথা ছিল তারা সবাই এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে এবার পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে ১৬ লাখ ৮২ হাজার শিক্ষার্থী। অর্থাৎ প্রায় চার লাখ শিক্ষার্থী বা প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে একজন ঝরে পড়েছে। এ পর্যন্ত যেসব তথ্য উপাত্ত পাওয়া গেছে, সেখানে ঝরে পড়ার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে উঠে এসেছে ওই শিক্ষার্থীদের পরিবার অবস্থা সম্পন্ন হয় না। তাদের পক্ষে এই শিক্ষার ব্যয় টেনে নেওয়া কঠিন হয়ে যায়। বাংলাদেশে প্রাথমিক পর্যায়ে বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ করা হলেও মাধ্যমিকের একটি বড় অংশই বেসরকারি। যেখানে পড়াশোনার খরচ বেশি।
তা ছাড়া মাধ্যমিকে বিভিন্ন কোচিং বা প্রাইভেট পড়ার খরচও আছে। সেটি অনেক পরিবারের জন্য বোঝা হয়ে যায়। ফলে একটি অংশ ঝরে যায়। তখন তারা বিভিন্ন দিকে রুটি-রুজির সন্ধানে হারিয়ে যায়। দেখা যায় যে অনেক ছাত্র-ছাত্রী স্কুল বাদ দিয়ে কাজ করছে। আবার অনেক ছেলেরা বাড়িতে কৃষিকাজে লেগে যাচ্ছে। কারণ এই বয়সী অনেক ছেলেমেয়ের ওপর পরিবারের দায়িত্ব চলে আসে। পড়াশোনার প্রতি তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। ওরা বুঝতে পারে না যে এসএসসি পাস করে তার জীবনে কী এমন পরিবর্তনই বা হবে। যেখানে এই দেশে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করেও হাজার হাজার মানুষ বেকার। তবে মেয়েদের ক্ষেত্রে ঝরে পড়ার অন্যতম কারণ নিরাপত্তা- হীনতা, মাধ্যমিকে নারী শিক্ষকের অভাব এবং স্কুলগুলোয় স্যানিটেশনের ব্যবস্থা না থাকা। স্কুলে যাওয়া আসার পথে এমনকি স্কুলের ভেতরে এই বয়সী মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে বাবা-মা খুব উদ্বিগ্ন থাকে। অনেকে ইভটিজিং, যৌন নিপীড়নের শিকার হয়। তা ছাড়া অনেক পরিবার মেয়ের পেছনে এতো খরচ করতে চায় না। তখন তারা মেয়েকে ঘরে বসিয়ে রাখা বা বিয়ে দেওয়াকেই সহজ সমাধান বলে মনে করেন। তবে এক দশক আগেও যে পরিমাণ শিক্ষার্থী মাধ্যমিকে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকতো, এখন সেই হার অনেকটাই কমে এসেছে। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বাংলাদেশে মোট শ্রমশক্তিতে যুক্ত সাড়ে ৮৮ শতাংশই জেএসসি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ঝরে পড়া শিক্ষার্থী। তাই এই শিক্ষার্থীদের ধরে রাখতে সরকারের বিনিয়োগ নীতি মালায় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। করোনাকালে দীর্ঘদিন দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। পড়ালেখায় অনীহার পাশাপাশি এরই মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের ওপর এর প্রভাব পড়েছে বেশি। এমনকি অনেকে বিদ্যালয় বিমুখ হয়ে পড়েছে।
দেশের প্রান্তিক এলাকার প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। করোনা মহামারীতে শিক্ষা খাতের দুরাবস্থা এবং শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে এই সময়কালে দারিদ্র্য বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে। এ বছরের জানুয়ারিতে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) প্রকাশিত এক জরিপে বলা হয়, করোনা পরিস্থিতির আগে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ২০ দশমিক পাঁচ শতাংশ। তবে করোনাকালে এই হার বেড়ে হয়েছে ৪২ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে অতি দারিদ্র্য। তিন গুণ বেড়ে এটি এখন হয়েছে ২৮ দশমিক পাঁচ শতাংশ। গত বছরের ২ নভেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত জরিপটি চালানো হয়। দারিদ্র্যের মুখোমুখি ৫৬ শতাংশ পরিবার দাবি করেছে, করোনার সময় তাদের আয় কমেছে। ধার করে, সঞ্চয় ভেঙে এবং খাদ্য ব্যয় কমিয়ে এই সংকট মোকাবিলা করেছে তারা। শিক্ষাসংশ্লিষ্ট গবেষকরা বলছেন, দেশের দরিদ্র পরিবারগুলো যেখানে ধার করে সংসার চালিয়েছে, সেখানে তাদের সন্তানদের শিক্ষার ব্যাপারটি বেশিরভাগ পরিবার মাথাতেই রাখেনি। এসব দরিদ্র পরিবারের অনেক সন্তান শিশুশ্রমে যুক্ত হয়েছে, যারা আর স্কুলে না-ও ফিরতে পারে।
শিক্ষা খাতের সংশ্লিষ্ট নানা গবেষণায় বলা হয়েছে, স্বাভাবিক সময়েই প্রতি বছর প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার আগে প্রায় ১৭ শতাংশ ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষের আগে প্রায় ৩৭ শতাংশ শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে। এর পেছনে অন্যতম কারণ দারিদ্র্য ও বাল্যবিয়ে। বিশেষ করে শহরের বস্তি এবং চর ও হাওর অঞ্চলের শিশুরাই বেশি স্কুলের পথ ভুলতে থাকে। করোনার কারণে এসব পরিবারে দারিদ্র্য আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। এ ছাড়া নতুন নতুন পরিবারও দরিদ্র হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার আরো বেড়েছে। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) তথ্য বলছে, দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় পৌনে তিন কোটি এবং দেশে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার কোটি।
এরই মধ্যে এই বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেসরকারি শিক্ষকদের জীবন ও জীবিকা। বেতন না পেয়ে তারা আজ মানবেতর জীবনযাপন করছে। কোভিড-১৯ মহামারীতে শিক্ষা খাতই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের ১৬০টিরও বেশি দেশে, প্রায় ১৬০ কোটি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ১০০ কোটি শিক্ষার্থী। তাদের শিক্ষা ব্যাহত হয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাহত হয়েছে। অন্তত চার কোটি শিশু প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘের এক নথিতে বলা হয়েছে, করোনাকালীন নেতিবাচক অর্থনৈতিক প্রভাবে শিক্ষা থেকে ঝরে পড়তে পারে দুই কোটি ৩৮ লাখেরও বেশি শিশু ও তরুণ। বাংলাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা এক লাখ ৩৪ হাজার ১৪৭টি। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা মাত্র ৬৫ হাজার ৫৯৩টি। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বেসরকারি মহাবিদ্যালয়ের সংখ্যা দুই হাজার ৩৬৩টি। বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৬ হাজার ১০৯টি এবং বেসরকারি মাদ্রাসার সংখ্যা সাত হাজার ৫৯৮টি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান আরো বলছে, দেশে অনার্স ও মাস্টার্স পড়ানো হয় এমন কলেজের সংখ্যা দেড় হাজারের কাছাকাছি। এ ছাড়া ৫০টি অধিভুক্ত বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ রয়েছে। সারা দেশে বেসরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ রয়েছে প্রায় চার হাজার। বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট রয়েছে ৫৫৩টি। দেশে নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় সাত হাজার। ইবতেদায়ি মাদ্রাসার সংখ্যা নয় হাজার। এ ছাড়া সারা দেশে ‘ব্যাঙের ছাতা’র মতো, অনুমোদিত অথবা অনুমোদনহীন ভাবে গড়ে উঠেছে প্রায় ৪০ হাজার কিন্ডারগার্টেন স্কুল। লক্ষ করার মতো বিষয় হলো, এসব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লাখ লাখ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত এবং প্রত্যেকের সঙ্গে জড়িত একটি করে পরিবার।
পরিসংখ্যান অনুসারে সারা দেশে শুধু কিন্ডার গার্টেন স্কুলে শিক্ষকতা করেন অন্তত পাঁচ লাখ শিক্ষক, আর সেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় এক কোটি। ফলে করোনার অভিঘাতে এই শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকদের পরিবারগুলো নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গত মে মাসে কভিড-১৯-সংক্রান্ত যে কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করেছে, সেখানেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিকপর্যায়ে ঝরে পড়া বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। সেভ দ্য চিলড্রেনের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, মহামারীর কারণে বিশ্বে ৯৭ লাখ শিশুর হয়তো আর ক্লাসে ফেরা হবে না। যাদের অনেকে বাল্যবিয়ের শিকার হবে। জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ জুলাইয়ে এক গবেষণায় জানায়, কোভিড-১৯-এর কারণে বিশ্বব্যাপী অন্তত চার কোটি শিশু স্কুল শুরুর আগে প্রারম্ভিক শৈশবকালীন শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা ও ইউনিসেফের এক যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়, কোভিড-১৯ সংকটের ফলে লাখো শিশুকে শ্রমে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। মহামারীতে পরিবারের দারিদ্র্যের প্রভাব পড়ছে শিক্ষার্থীদের জীবনে। আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত পরিবারগুলোর মেয়েদের দ্রুত বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে লক্ষণীয় হারে। পাশাপাশি পরিবারের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেয়ে শিশুদের দিয়ে কায়িক পরিশ্রম করাতে বাধ্য হচ্ছে অনেক পরিবার। এখন প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঝরে পড়া এবং বিদ্যালয়বিমুখ শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন সহশিক্ষামূলক কার্যক্রম হাতে নেওয়া উচিত। শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি করতে হবে। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নানা ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। হতে পারে সেটি সাংস্কৃতিক, খেলাধুলা অথবা কুইজ প্রতিযোগিতা। কেননা, দেশের শিক্ষাক্ষেত্রকে এগিয়ে নিতে প্রাথমিক শিক্ষার বিকল্প নেই।
সরকার গুরুত্ব বিবেচনা করেই প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেছে। কিন্তু এখন দেশের প্রান্তিক পর্যায় থেকে শুরু করে সব জায়গায় শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করা সরকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে পারলেই শিক্ষার্থীদের আগের রূপে শিক্ষাঙ্গনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। গেল বছরের অক্টোবরে জাতিসংঘের শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাল্যবিয়েতে বিশ্বে শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অষ্টম অবস্থানে এবং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শীর্ষে। তা ছাড়া ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাটা কত হবে তার ধারণা না মিললেও কিন্ডার গার্টেন আর বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদেরই শিক্ষাঙ্গনমুখী না হওয়ার শঙ্কা বেশি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এখন এই ঝরে পড়া রোধ করে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনাই এখন সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বিস্তারে সরকার বৃত্তি, উপবৃত্তি, বিনামূল্যে বই ও খাবার সরবরাহসহ আরো নানা খাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করলেও শিক্ষার্থীদের এই ঝরে পড়ার প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ঝরে পড়ার অন্যান্য কারণগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি বিশেষজ্ঞদের। বেসরকারিভাবে এই ঝরে পড়া নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে কিন্তু এ নিয়ে রাষ্ট্রীয় বা সরকারি পর্যায়ে গবেষণার প্রয়োজন আছে। তখন প্রকৃত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা যাবে আর সেই মোতাবেক প্রতিকারের উপায় বের করা সহজ হবে।
রায়হান আহমেদ তপাদার : প্রবাসী, গবেষক ও কলাম লেখক।
আজকালের খবর/আরইউ