প্রকাশ: শনিবার, ২৭ মে, ২০২৩, ৮:০৩ PM

সবুজেঘেরা বাংলার মেঠোপথকে হলুদ রংয়ে রাঙিয়েছে সোনারঙা সোনালু। হলুদ রংয়ের ঝুলন্ত ফুল সোনালু। গ্রীষ্মে গাছজুড়ে ঝুলন্ত মঞ্জুরিতে এই ফুল ফোটে। গাছে দুলতে থাকে হলুদ-সোনালি রংয়ের থোকা থোকা ফুল। পুরো গাছ থেকে হলুদ যেন বেয়ে বেয়ে পড়ছে। যেন হলুদরঙা কোনো স্বপ্ন! আবার ফুলের ফাঁকে দেখা যায় লম্বা ফল। হলুদ বরণ সৌন্দর্যে মাতোয়ারা করে রাখে চারপাশ।
গ্রীষ্মের এই সময়টাতে খরতাপে চলতি পথে পথিকের নজর কাড়ছে এই সোনারঙা সোনালু। গ্রীষ্মের প্রকৃতিতে প্রাণের সজীবতা নিয়ে যেসব ফুল ফোটে তার মধ্যে সোনালু উল্লেখযোগ্য। গ্রীষ্মে এ ফুল দেখতে আকর্ষণীয়। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে এ ফুল বান্দরলাঠি বা বান্দরলড়ি নামেই বেশি পরিচিত।
সম্প্রতি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের গোল্লাজয়পুর গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, গ্রামের মেঠোপথের পাশে ফুটে আছে সোনালু ফুল। উপজেলার মাইজবাগ, আঠারবাড়ি ও জাটিয়া ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় চোখে পড়েছে সোনালু গাছে ফুল ফুটে আছে। গোল্লাজয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে দণ্ডায়মান সোনালু ফুলের গাছের নিচে যানবাহন থামিয়ে ছবি তুলতে দেখা যায় অনেককে।
গোল্লাজয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নূরুল ইসলাম জানান, ফুলগুলো যখন ফুটতে শুরু করে, তার সঙ্গে নতুন পাতার জাগরণ। দেখতে দেখতে ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় গাছ। পুষ্পিত সোনালু তখন যেন কাঁচা সোনা রংয়ে আবৃত। বেড়ে ওঠার সময় তেমন দৃষ্টিতে না পড়লেও ফুল ফোটার পর এর রূপ দেখে মন-প্রাণ প্রশান্তিতে ভরে যায়। আবার অনেক মানুষ এই গাছের নিচে বসে বিশ্রাম নেন ও ছবি তোলেন।
ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. রফিকুল ইসলাম খান (উদ্ভিদবিজ্ঞান) বলেন, সোনালু গাছের ডালপালা ছড়ানো-ছিটানো। দীর্ঘ মঞ্জুরিদণ্ডে ঝুলে থাকা ফুলগুলোর পাপড়ির সংখ্যা পাঁচটি। সবুজ রংয়ের একমাত্র গর্ভকেশরটি কাস্তের মতো বাঁকানো। এ গাছের ফল বেশ লম্বা, লাঠির মতো গোল। গ্রীষ্মের প্রকৃতিতে গ্রামে একসময় অনেক সোনালুগাছ চোখে পড়ত। এ ছাড়া হাটবাজারের পাশেও দেখা যেত হলুদিয়া সাজের সোনালুর উপস্থিতি। এখন হাতে গোনা কিছু গাছ দেখা যায় পথে প্রান্তরে। দিন দিন কমে আসছে সোনালুর সংখ্যা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুসরাত জামান বলেন, প্রকৃতির ওপর ভর করেই হলুদ-সোনালি রংয়ের সৌন্দর্য বিতরণ করে অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে সোনালু। তবে ফুটন্ত সোনালুর দোল দেখে হৃদয়ে যে প্রকৃতির উষ্ণ অভ্যর্থনা জাগে। এ ফুলের আরেক নাম বান্দরলাঠি। গাঢ় সবুজ রংয়ের পাতাগুলো যৌগিক, মসৃণ ও ডিম্বাকৃতির। ফুল এক থেকে দেড় ইঞ্চি পর্যন্ত চওড়া হয়। এছাড়াও ফলের শ^াস বিভিন্ন রোগের ওষুধ হিসেবে কাজে লাগে।
আজকালের খবর/ওআর