শিরোনাম: |
জাতীয় নাক কান গলা ইনস্টিটিউটে কেনাকাটায় ব্যাপক অনিয়ম!
সাইফুল ইসলাম ও ইসমাইল হোসেন ইমু
|
![]() অডিট প্রতিবেদন কীভাবে নিষ্পত্তি হয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। দেশের সব হাসপাতালেই নানা অনিয়ম রয়েছে। সেগুলো এক পর্যায়ে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। এই হাসপাতালের অনিয়মও নিষ্পত্তি হবে বলে তিনি দাবি করেন। হাসপাতালের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে ডা. হানিফ বলেন, এই হাসপাতালে অনেক জটিল রোগীর চিকিৎসা বিনা পয়সায় করা হয়। শিশু বধিরদের চিকিৎসায় প্রায় আট লাখ টাকা ব্যয় হয়। তবে সবই সরকার বহন করে থাকে। এ ছাড়া করোনার সময় ঝুঁকি নিয়ে রোগীদের সিবা নিশ্চিত করতে গিয়ে তিনিও করোনায় আক্রান্ত হন। হাসপাতালের কেনাকাটায় অনিয়মের বিষয়ে স্বীকার করে তিনি বলেন, কিছুটা অনিয়ম হতেই পারে, সবাইতো মানুষ। এই প্রতিবেদককে তিনি প্রতিবেদন লেখার বিষয়ে সতর্ক করে বলেন, একটি রিপোর্ট করে দিলেইতো হলো না। সার্বিক বিষয় খোঁজ নিয়ে প্রতিবেদন তৈরির উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। তিনি বলেন, অনেকেই ফোন করে জানতে চান অনিয়মের বিষয় সবাইকেই রিপোর্ট না করার জন্য বলে থাকি। আপনাকেও রিপোর্ট না করার জন্য বলবো। অডিট নিষ্পত্তির বিষয়ে তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আপত্তি জানিয়ে একাধিক আবেদন করেছেন বলে জানালেও আবেদনের কপি দেখাতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। এক পর্যায়ে সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে তার সখ্যতার কথা উল্লেখ করেন তিনি। জানা গেছে, জাতীয় নাক কান গলা ইনস্টিটিউট এক্স-রে, সিটি স্ক্যান ও এমআরআই ফিল্ম সরবরাহের জন্য চুক্তি করেছিল একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। কথা ছিল, প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বক্সে একশ ২৫টি করে ফিল্ম সরবরাহ করবে। তবে তারা করেছে একশটি করে। এভাবে ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরে জাতীয় নাক কান গলা ইনস্টিটিউট পণ্য কম নিয়েও পূর্ণ বিল পরিশোধ করে ১৮ লাখ সাত হাজার পাঁচশ ৬২ টাকার আর্থিক ক্ষতি করেছে। এ দুই অর্থবছরে ইনস্টিটিউটে এমন ২৬ ধরনের অনিয়ম পেয়েছে স্বাস্থ্য অডিট অধিদপ্তর। তাদের নিরীক্ষায় এসেছে, এসব অনিয়মের মাধ্যমে ২৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকার ক্ষতি করা হয়েছে। যন্ত্রপাতি কেনাকাটা ও আউটসোর্সিং জনবল নিয়োগসহ আরো বিশেষ কিছু খাতে অনিয়ম হয়েছে। শুধু চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনাকাটায় ১২ কোটি ২৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকার অনিয়ম হয়। নথিপত্রে দেখা যায়, গত দুই বছরে জাতীয় নাক কান গলা ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন বিভাগের জন্য বেশ কিছু স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রোপচার ও রোগ পরীক্ষার সামগ্রী কেনা হয়। এর মধ্যে ক্লিনিক্যাল কেমিস্ট্রি অ্যানালাইজার, এন্ডোস্কপিক ক্যামেরা, ফাইবার অপটিক লাইট কেব্ল, ফুল এইচডি মেডিকেল মনিটর, হেমাটোলজি অ্যানালাইজার, পোস্ট-ইউরোগ্রাফি সিস্টেম অন্যতম। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভিক্টর ট্রেডিং করপোরেশন, তাবাসসুম ইন্টারন্যাশনাল ও পিউর ল্যাব টেক এসব যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে। এসব যন্ত্রপাতি কেনার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছিল না। তার ওপর ভিক্টর ট্রেডিং ও তাবাসসুম ইন্টারন্যাশনাল যেসব যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছে, সেগুলো বিদেশ থেকে আমদানির সপক্ষে নথিপত্র (বিল অব এন্ট্রি ও শিপমেন্ট ডকুমেন্ট) পাওয়া যায়নি। প্রয়োজনীয় নথিপত্র ছাড়াই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগসাজশ করে বিল পরিশোধ করে। আজকালের খবর/আরইউ |