শিরোনাম: |
জমকালো আয়োজনে অনুষ্ঠিত ইউরো বাংলা বিজনেস সামিট
ডেস্ক রিপোর্ট
|
![]() প্যারিসের অবারভিলায় এক অভিজাত হলে অনুষ্ঠিত এ সামিটে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্সস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর দিলারা বেগম। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ‘লা ভিলা দে সাসলি’র মেয়র মিশেল সিনোট এবং দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব শারহাদ শাকিল। সামিট সঞ্চালনায় ছিলেন সাংবাদিক প্রিয়। প্রথমেই অতিথিদের সামিটে উপস্থিত প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথিসহ সকলকে উপস্থিতির জন্য ধন্যবাদ জানান ইউরো বাংলা বিজনেস এসোসিয়েশনের সভাপতি মঞ্জুরুল হাসান চৌধূরী সেলিম। এরপর প্রধান অতিথি বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর উপস্থিত ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে মূল্যবান বক্তব্য প্রদান করেন। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে সামিট আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করে গঠনমূলক আলোচনা করেন। তিনি উপস্থিত ব্যবসায়ী নেতা-উদ্যোক্তাদের প্রবাসে ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা, মানোন্নয়নের উপায় ও গুরুত্ব, নতুন নতুন নানা সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেন। এ ছাড়া দেশে প্রবাসীদের বিনিয়োগ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের ভিশন উপস্থাপন করেন। পরে উপস্থিত ব্যবসায়ীদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেয়াসহ প্রবাসী বাংলাদেশিদের ব্যবসা সম্প্রসারণ, সংগঠিত হওয়ার উপর গুরুত্ব ও উৎসাহ প্রদান করেন। প্রধান অতিথি আরো বলেন, বিজনেস-টু-বিজনেস নেটওয়ার্কিং এর মাধ্যমে ব্যবসা প্রসারের আরেকটি বিশাল জগত রয়ে গেছে যে পর্যন্ত এখনো বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা পৌঁছাতে পারেননি। এই অনুন্মোচিত ও অবারিত দিগন্ত খুলে নেওয়ার দায়িত্ব প্রতিটি বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর নিজের, এ ব্যাপারে দূতাবাসের পক্ষ থেকে করা সম্ভব এমন সকল বিষয়ে আলোচনায় দূতাবাস কর্তৃপক্ষ যে কোনো সময় তৈরী আছে বলে তিনি অবহিত করেন। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের আরো সু-সংগঠিত, দক্ষ, এক্সপার্ট ও স্মার্ট হওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, শুধু দোকান বা রেস্টুরেন্ট খুলে থাকাই বিজনেস নয়, বিজনেসের আরো কত ধরণ ও লেভেল রয়েছে তা 'এক্সপ্লোর' করার জন্য এ সামিটের মতো বিভিন্ন আয়োজন ও প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামে উপস্থিত হতে হবে। নিজেদের জানার পরিধি আরো বৃদ্ধি করতে হবে। লিজেন্ডারী বিজনেস জায়ান্ট হতে হলে সেলফ-ডেভেলপমেন্টের বিকল্প নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন। বিশেষ অতিথি মেয়র মিশেল সিনোট তার বক্তব্যের শুরুতেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকেই ফ্রান্সের সাথে অর্থনৈতিক ও কুটনৈতিক সম্পর্কের ঐতিহ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ফ্রান্স সাম্যের দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে সম্মিলিত অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের ঘনিষ্ট বৈশ্বিক পার্টনার বলেই বিবেচনা করে থাকে। ইউরো বাংলা বিজনেস এসোসিয়েশনের এ সামিট আয়োজনকে একটি উদাহরণমূলক দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করে তিনি ব্যবসায়ী সমাজের জন্য ফ্রান্স প্রশাসনের নানা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। ব্যবসায় জড়িত প্রবাসী বাংলাদেশীরা স্থানীয় অর্থনীতিতে যে অবদান রাখছেন তিনি তার মূল্যায়ন করে বলেন, এটি ফ্রান্সে জাতীয়ভাবেও মূল্যায়িত হচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশি প্রবাসীদের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়তাকে ফরাসী প্রশাসন বরাবরই বিভিন্ন প্রশংসামূলক আলোচনায় এনে থাকে বলে তিনি জানান। তিনি ব্যবসায়ী সমাজকে অন্যান্য দেশের মতো আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের দিগন্তে প্রবেশের জন্য উৎসাহ প্রদান করেন। বাংলাদেশি পণ্য বেশি বেশি আমদানী ও ফরাসী পণ্য বেশী বেশী রপ্তানী মূলত দুই দেশের সহযোগিতার আওতা শুধু বাড়াতেই সাহায্য করতে পারে এবং এর সুফল দুই দেশের প্রান্তিক নাগরিকও ভোগ করবেন। তাই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে যে কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হলে তা ফ্রান্স প্রশাসন বিবেচনা করতে প্রস্তুত বলে তিনি জানান। এ ছাড়া সেবা, পন্য ও ব্যক্তিগত কোয়ালিটি ও ডিসিপ্লিনারী বিষয়ে বাংলাদেশীদের সচেতনতার গুরুত্ব দিয়ে একই সাথে সবার উন্নতি কামনা করেন। ইউরো বাংলা বিজনেস এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট তিনি তার বক্তব্যে এসোসিয়েশনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও নীতি ব্যাখ্যা করে ব্যবসায়ী সমাজের উন্নয়নের জন্য ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্মে যুক্ত থাকার আহবান জানান। এসোসিয়েশনের কো-অর্ডিনেটর আবু তাহির তার বক্তব্যে এ সামিটকে ইউরোপের বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বৈপ্লবিক সুচনা বলে অভিহিত করে এসোসিয়েশনের সাথে যে কোনো প্রকারে যুক্ত থাকার জন্য সারা ইউরোপের ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানান। তিনি প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিসহ সকলকে ধন্যবাদ জানান। এ ছাড়া সামিটের স্পন্সর সকল ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সার্বিক আইটি সাপোর্টের জন্য এফএনএফ ল্যাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বিশেষ বক্তাদের মধ্যে আরো ছিলেন বিজনেস লিডার সাত্তার আলী সুমন, তিনি আমদানী সংক্রান্ত সমসাময়িক রিয়েল কেইস তুলে ধরে এরকম সমস্যাদির জন্য দূতাবাসের দৃষ্টি আকর্ষন করেন। পণ্য পরিবহনে বিমান কোম্পানিগুলোর ভূমিকার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেন কুয়েত এয়ারওয়েজের কমার্শিয়াল ডিরেক্টর আনভার শেইখ। ব্যবসায় সফলতার উপায়, ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়া, একাউন্টিংয়ের গুরুত্ব, সাকসেস এর স্ট্র্যাটেজি নিয়ে পর্যায় ক্রমে বক্তব্য দেন বিজনেস মাস্টার আনিস খান, মনোয়ার ক্লার্ক, আপেল আমিন কাওসার। এ ছাড়া কার্গো-কন্টেইনার ও জাহাজ শিডিউলিং সংকট, বন্দরের স্বল্পতা, আইনী জটিলতা ইত্যাদি বিষয়ে আমি ভয়াজের উত্তরাধিকার ও কর্ণধার প্রয়াত এইচ এস হায়দারের পুত্র তানজিম হোসাইন দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বক্তাদের মধ্যে আরো ছিলেন, ফারুক খান, রাজিব দাস ও কাওসার আমিন হাওলাদার। সমাপনী বক্তব্যে ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ কাশেম অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে দল-মত নির্বিশেষে সকলকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এতে দেশের ভাবমর্যাদা উজ্জ্বল হয়, নিজেদের কার্যক্রমও সহজ হয়। ক্ষতি কারোই হয় না। অতএব দূরত্ব কমানোর ও নিজেদের উন্নত করার সময় এটি- বলে উল্লেখ করেন তিনি। বিনোদন পর্বে একগুচ্ছ সঙ্গীত উপহার দেন ইউরোপের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী শিউলি গিয়াস ও মুন্নী খন্দকার। সবশেষে আগামী সামিটের জন্য ইউরো বাংলা বিজনেস এসোসিয়েশনের ফেসবুক পেজ, সামিটের ফেসবুক পেজ ও ওয়েবসাইট অনুসরণের জন্য নির্দেশনা দিয়ে সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। আজকালের খবর/আরইউ |