প্রকাশ: শুক্রবার, ৬ আগস্ট, ২০২১, ৫:২৬ পিএম
রাজশাহীর বাগমারায় বেশিরভাগ রাস্তাকেই পুকেরের পাড় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, ফলে নির্মাণের কিছুদিন পরই তা বৃষ্টির পানিতে ধসে যাচ্ছে। এতে করে ভেঙ্গে পড়ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। পাকা সড়কগুলো একেকটি যেন মরন ফাঁদে পরিণত হচ্ছে।
সড়ক ঘেঁষে পুকুর খননের কারণেই সড়কের এই বেহাল অবস্থা বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী সানোরার হোসেন। স্থানীয় প্রভাবশালীরা রাস্তার সঙ্গে একের পর এক পুকুর খননে করে এই অচল অবস্থার সৃষ্টি করছে। এছাড়া পুরানো পুকুরগুর ধার ঘেঁসে সড়ক থাকায় অনেক স্থানে পুকুরের গর্ভে সড়ক চলে যাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে সড়কগুলো রক্ষায় উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় উপজেলা প্রকৌশলীর দাবির প্রেক্ষিতে স্থানীয় এমপি ইঞ্জিনিয়র এনামুল হক বিধি মোতাবেক আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন। তার পরও কোনোভাবেই রাস্তার ধার ঘেঁষে পুকুর খনন বন্ধ করা যাচ্ছেনা বলে জানিয়েছেন তিনি।
গ্রামীণ সড়কের ধার ঘেঁষে পুকুর বা সেচ নালা তৈরি না করার নির্দেশ দিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ একটি পরিপত্র জারি করে। বিভাগের উপ-সচিব জেসমিন পারভীনের স্বাক্ষর করা পরিপত্রে এটাকে ফৌজদারি অপরাধ বলা হয়েছে। এ সংক্রান্ত ছয়টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ওই পরিপত্রে।
উপজেলার ভবানীগঞ্জ-বীরকুৎসা,ভবানীগঞ্জ-সইপাড়া, ভবানীগঞ্জ-কেশরহাট, শ্রীপুর-মোহনগঞ্জ, শিকদারী-তাহেরপুর, গোপালপুর-বালানগর হামিরকুৎসা-বীরকুৎসা, হাটগাঙ্গোপাড়া-দামনাশসহ আরো কয়েকটি সড়কের পাশে এসব পুকুর দেখা যায়। গত দুই-তিন বছরের মধ্যে এসব পুকুর খনন করা হয়েছে। উপজেলার রামরামা, মেন্দিপাড়া, দ্বীপপুর, সাঁইধারায় সড়কের পাশে পুকুর খনন করার জন্য বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই স্থানে সড়কের গর্ভে পুকুর প্রায় চলে গেছে।
এর মধ্যে মেন্দিপাড়ায় আবুল হোসেন নামের এক ব্যক্তির পুকুরের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে তিনকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়কটি। স্থানীয় প্রকৌশলীর দপ্তর ও লোকজনের উদ্যোগে সড়কগুলো রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছে। একইভাবে উপজেলার সগুনা গ্রামে আয়েন উদ্দিন নামে এক স্থানীয় মেম্বার রাস্তার ধার ঘেঁসে পানি আটকিয়ে দ্বীপনগর মোড়ে বিলে একটি পুকুর তৈরি করেছেন। এতে দ্বীপনগর-ভবানীগঞ্জ ও দ্বীপনগর-বালানগর সড়ক ভেঙে পড়ছে।
এদিকে সড়কের ধাঁর ঘেঁষে পুকুর খননকারি আবুল হোসেন ও রফিকুল ইসলাম বলেন, নিজেদের জমিতে তারা পুকুর খনন করেছেন। তবে ওই সময়ে প্রশাসনের পক্ষে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া কথা স্বীকারও করেন তারা।
বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদ জানান, এর আগে কয়েকজন পুকুর মালিককে সড়ক ঘেঁষে পুকুর খনন করায় ধরে নিয়ে এসে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তারা এই ধরণের কাজে আর জড়াবেন না বলেও মুচলেকা দিয়েছেন। নতুন করে যাতে কেউ পুকুর খনন করতে না পারে এবং সড়কগুলো রক্ষায় এমপির নির্দেশনা মানা হবে জানান তিনি।
একে